চলতি মাসে একাধিক নিম্নচাপ হতে পারে

নিউজবাংলা,৩ অক্টোবর সোমবার

চলতি অক্টোবর মাসে বঙ্গোপসাগরে এক থেকে দু’টি নিম্নচাপ সৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

এরমধ্যে একটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। দীর্ঘমেয়াদী আবহাওয়ার পূর্বভাসের লক্ষ্যে রবিবার আবহাওয়া বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে গঠিত কমিটির এক বৈঠকে এ কথা জানানো হয়। খবর বাসসের।

এতে বলা হয়, অক্টোবরের প্রথমার্ধে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু-প্রবাহ (বর্ষা) দেশ থেকে বিদায় নিতে পারে। এসময় গঙ্গা, ব্রাহ্মপুত্র ও মেঘনা অববাহিকায় স্বাভাবিক প্রবাহ বিদ্যমান থাকতে পারে।

বিশিষ্ট আবহাওয়াবিদ ও বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক ও দীর্ঘমেয়াদী পূর্বাভাস প্রদান কমিটির চেয়ারম্যান সামছুদ্দিন আহমেদ আজ এ কথা জানান।

চেয়ারম্যান বলেন, চলতি অক্টোবরে গংগা, ব্রক্ষপুত্র ও মেঘনা অববাহিকায় পানির স্বাভাবিক প্রবাহ বিদ্যমান থাকতে পারে। এছাড়া এ মাসের শেষ দিন পর্যন্ত দৈনিক গড় সূর্য-কিরণকাল ছয় থেকে সাত ঘণ্টার মধ্যে থাকবে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের ঝড় সতর্কীকরণ কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত এই সভায় উল্লেখ করা হয়, আবহাওয়া সংক্রান্ত তথ্য-উপাত্তের বিশদ পর্যালোচনা বৈঠকে জানানো হয়। বৈঠকে বলা হয়, সেপ্টেম্বর মাসে সারাদেশে স্বাভাবিকের চেয়ে অপেক্ষাকৃত কম বৃষ্টিপাত হয়েছে। তবে উত্তরাঞ্চলে মৌসুমী বায়ুর কারণে ময়মনসিংহ বিভাগের বিভিন্ন জেলায় তুলনামূলক বেশি বৃষ্টিপাত হয়।

সাধারণত ময়মনসিংহ অঞ্চলে সেপ্টেম্বর মাসে বৃষ্টিপাত হওয়ার কথা ৩৩৫ মি.মি.। কিন্তু এবার গড় এই বৃষ্টিপাতের পরিমাণ হচ্ছে ৪১০ মি.মি.।

শিগগিরই আধুনিক আবহাওয়া পূর্বাভাস

প্রাকৃতিক দূর্যোগের পূর্বাভাসের মাধ্যমে জীবনহানি এবং ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমাতে সরকার ঢাকা ও রংপুরে আধুনিক রাডার ব্যবস্থা স্থাপন প্রকল্পের কার্যক্রম শুরু করেছে। নতুন এই রাডার ব্যবস্থা স্থাপনের মাধ্যমে কালবৈশাখী, টর্নেডো, সাইক্লোনসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দূর্যোগের পূর্বাভাসকে দৃশ্যত আরো বেশি সমন্বিত বিশ্লেষন করা সম্ভব হবে বলে আবহাওয়া বিভাগ থেকে জানানো হয়।

প্রকল্পের আওতায় ঢাকা ও রংপুরে পুরানো রাডার ব্যবস্থার পরিবর্তে আধুনিক রাডার ব্যবস্থা স্থাপন করা হবে। এর মাধ্যমে আবহাওয়া অধিদপ্তরের অপর তিনটি রাডার- কক্সবাজার, খেপুপাড়া এবং মৌলভীবাজারের সঙ্গে আন্তঃযোগাযোগ স্থাপন করে পূর্বাভাসগুলো একই প্লার্টফর্মে নিয়ে আসা সম্ভব হবে।

আবহাওয়া বিভাগ জানায়, ১৫ বছর আগে স্থাপিত হওয়ায় রংপুরে রাডার ব্যবস্থাটির সক্ষমতার সময়কাল অতিক্রান্ত হওয়ায় এখন এটি নিস্ক্রিয় হয়ে পড়েছে এবং বহুতল ভবনের কারণেও ঢাকা থেকে পাঠানো টেলিকমিউনিকেশন তরঙ্গ বাধাগ্রস্থ হচ্ছে।

এছাড়া, বিশ্ব বাজারে রাডারগুলোর খুচরা যন্ত্রাংশ এখন আর পাওয়া না যাওয়ায় নতুন রাডার স্থাপনের এখন আর কোনো বিকল্প নেই।

আবহাওয়া অধিদপ্তর আগামী ২০১৯ সালের জুনের মধ্যে এই প্রকল্প বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ২শ’ ৮ কোটি টাকা। ইতিমধ্যেই জাতীয় অর্থনীতিক কাউন্সিল (একনেক)-এর এক্সিকিউটিভ কমিটি প্রকল্পটির অনুমোদন দিয়েছে।

প্রকল্প বাস্তবায়নে সরকার নিজস্ব তহবিল থেকে ২২ কোটি ৫৭ লাখ টাকা এবং জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগী সংস্থা (জাইকা) ১৮৬ কোটি টাকা যোগান দেবে।

এর আগে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে থেকে এই প্রকল্পে অর্থায়নের জন্য জাপানকে প্রস্তাব করা হলে জাপান সম্মতি জানায়। এরপর দুই দেশ ২৪ জুন, ২০১৫ সালে প্রকল্প সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষর করে।

প্রতিবছর ঘন ঘন সাইক্লোন, ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, জলোচ্ছ্বাস, ভারী বর্ষণ, খরা, টর্নেডো, কালবৈশাখীসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দূর্যোগে অনেক জীবনহানির সঙ্গে সঙ্গে জানমালেরও অনেক ক্ষতি হওয়ায় বাংলাদেশে আধুনিক আবহাওয়া পূর্বাভাস ব্যবস্থা স্থাপন করা অত্যাবশ্যকীয় হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানান।

নিউজবাংলা/একে

Share This:

Comments

comments

Next: ১০ টাকার প্রকল্পে ব্যয় দেখানো হচ্ছে ৩০ টাকা: মির্জা ফখরুল

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*