নিউজবাংলা: ১৪ জুন, মঙ্গলবার:
আব্দুল্লাহ আল নোমান:
‘ভাই একটা মালা নেন, ও ভাই নেন না একটা মালা। মাত্র ১০ টাকা, ১০ টাকা।’ এভাবে অল্পবয়স্ক অনেক স্কুলশিশু টাঙ্গাইল শহরের বিভিন্ন স্থানে ফুল বিক্রি করছে।
সরেজমিনে টাঙ্গাইল শহরের নিরালা মোড়ে কথা হয় ৬ ফুল বিক্রেতা শিশুর সাথে। এই ৬ জনের মধ্যে ৩ জনেই ভাই-বোন। তাদের সবার বাসা টাঙ্গাইল শহরের বেবিস্ট্যান্ডে। তারা সকলেই পৌর আইডিয়াল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের লেখাপড়া করে। তাদের সবারই টানাটানির সংসার। পিতার আয়ে সংসার চলে না। তাদের খরচও দিতে পারে না মা-বাবা। তাই পিতার পাশাপাশি সংসারের খরচ চালানোর জন্য তারা ফুল বিক্রি করছে।
সকালে তারা স্কুলে যায়। স্কুল শেষ হলেই বেরিয়ে পড়ে ফুল বিক্রি করতে। এখন বকুল ফুলের মৌসুম। দুপুর থেকে রাত ১০ টা পর্যন্ত তারা বকুল ফুল বিক্রি করে। যেদিন স্কুল বন্ধ থাকে সেদিন তারা সকাল থেকেই ফুল বিক্রি শুরু করে।
ওদের সাথে বলে জানা যায়, ওরা গাছ থেকে ফুল পেড়ে মালা বানিয়ে বিক্রি করে। ওরা যখন শহরের বিভিন্ন রাস্তায় কিংবা মোড়ে ‘ভাই একটা মালা নেন, ও ভাই নেন না একটা মালা’ বলে লোকজনের কাছে যায় তখন অনেকেই ফুলের মালা কিনে নেন।
এ বিষয়ে কথা হয় মলি চহাল (৮) নামে এক ফুল বিক্রেতার সাথে। শিশুটি বলে, আমি তৃতীয় শ্রেণীতে লেখাপড়া করি। আমাদের স্কুল যখন ছুটি হয় তখন আমরা ফুল বিক্রি করি। আর যেদিন স্কুল বন্ধ থাকে সেদিন সকাল থেকে রাত ৯ টা থেকে ১০ টা পর্যন্ত ফুল বিক্রি করি। আমি প্রতিদিন প্রায় ২০ টি মালা বিক্রি করতে পারি। আমার বাবা ডিম বিক্রি করে। বাবার পাশাপাশি আমি ফুলের মালা বিক্রি করে সংসারের জন্য কিছু অর্থ উপার্জন করি।
কথা হয় আরেক ফুল বিক্রেতা শান্তনার সাথে সে বলে, আমি শহরের বিভিন্ন স্থানে ফুল বিক্রি করি। তবে শহরের নিরালামোড়ে বেশি ফুল বিক্রি হয়। ফুল বিক্রির টাকা আমি বাবা-মাকে দেই।
কথা হয় প্রশান্তর (১০) সাথে সে বলে, আমি প্রতিদিন ১০০ থেকে ২০০ টাকার ফুল বিক্রি করি। কথা হয় জয়ন্ত নামে আরেক ফুল বিক্রেতার সাথে সে বলে, আমার বাবা মারা গেছে। আম্মুর পাশাপাশি আমি সংসারের কিছুটা খরচ বহন করার জন্য ফুল বিক্রি করি। আমরা কয়েরজন শহরের বিভিন্ন জায়গায় ফুল বিক্রি করি। আমি এখন ১ম শ্রেণীতে পড়ি। স্কুল ছুটি হওয়ার পরে আমরা দলবদ্ধভাবে ফুল বিক্রির জন্য শহরে চলে আসি।
নিউজবাংলা/একে
Comments
comments