নিউজবাংলা: ১৪ জুন, মঙ্গলবার:
নাটোর প্রতিনিধিঃ
নাটোরের বড়াইগ্রামে বনপাড়া খ্রিষ্টান ধর্ম পল্লীর নিহত সুনীল গোমেজের বাড়ি ও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন নাটোর-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস। সোমবার দুপুর দেড়টার দিকে তিনি নিহত সুনীল গোমেজের বাড়িতে আসেন ও তার পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলেন ও বিভিন্ন বিষয় জানতে চান। তিনি শোকার্ত পরিবারের প্রতি সহমর্মিতা ও সমবেদনা জানান। সেসময় নিহতের স্ত্রী জাসিন্তা রিবেরূ ও কন্যা স্বপ্না গমেজ জানান, যে তাদের বাড়ীতে তিনটি ভাড়াটিয়া থাকে। তারমধ্যে লালপুর উপজেলার কদিমচিলান গ্রামের আবদুল্লাহ আল মামুনের (সবুজ) স্ত্রী জুলেখা বেগম সুখির ও বড়াইগ্রামের কালিকাপুর গ্রামের রফিকুল ইসলামের স্ত্রী মনোয়ারা খাতুনের সাথে মাঝে-মাঝে ঝগড়া হয় বিদ্যুৎ, পানি ও উঠান পরিষ্কার নিয়ে। এছাড়া ঐ দুই ভাড়াটিয়ার ঘরে আসে বিভিন্ন সময়ে অপরিচিত যুবক ছেলে-মেয়ে। এর প্রতিবাদ করায় ঝগড়া হয় তাদের সাথে। স্ত্রী জাসিন্তা রিবেরূ ও কন্যা স্বপ্না তাদের নিরাপত্তার কথা বলতে গিয়ে সংসদ সদস্যকে বলেন, সুনীল গোমেজের হত্যা মামলা দায়েরের পর ডিবি পুলিশ গ্রেফতার করে ভাড়াটিয়া আবদুল্লাহ আল মামুন ও মনোয়ারা খাতুনকে। তাদেরকে গ্রেফতারের পর ঐ পরিবারের সদস্যরা আমাদেরকে হুমকি ধামকি দিচ্ছে বিভিন্ন সময়ে। এতে আমাদেরও প্রাণ নাশের আশঙ্কা রয়েছে। আমরা নিরাপত্তা চাই। সেই সাথে চাই সুনিল হত্যার সঠিক তদন্ত ও দোষী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি। তবে এ দুঃসময়ে আপনার আগমনে আমাদের চলার পথে সাহস যোগাবে। সংসদ সদস্য ঘটনাস্থল বাড়ি সংলগ্ন মুদী দোকান পরিদর্শন করেন। পরে নিহতের বাড়ির উঠানে স্থানীয় খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের লোকজনের সাথে কিছু সময় কাটান ও কথা বলেন। সে সময় তিনি পুলিশ প্রশাসনকে নিহত সুনিল গমেজের পরিবারের নিরাপত্তার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেষ দেন এবং যারা হুমকি-ধামকি দিয়েছে তাদের বিষয়ে খোঁজ-খবর নেওয়ার নির্দেষ দেন।
তিনি বলেন,বাংলাদেশের দেশের সাথে অন্যান্য রাষ্ট্রের সুসম্পর্ক বিচ্ছেদ করার জন্য পর্দার আড়াল থেকে এসব গুপ্ত হত্যা চালানো হচ্ছে। আপনার ভীত হবেন না। এই হত্যার সুষ্টু তদন্ত হবে, বিচারও হবে। তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া হবে। সকলে ঐক্যবদ্ধ থাকবেন। দোষী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনা হবে, সে জে-ই-হোক না কেন। আমি এ ঘটনার জন্য বিস্মিত ও মর্মাহত। আমি নিহত সুনীল গোমেজের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাতে এসেছি। তিনি আরও বলেন, আপনারা কেউ ভয় পাবেন না। এই সরকার আপনাদের সাথে আগেও ছিলো এখনও আছে। দেশে অশান্ত পরিবেশ সৃষ্টি করে কেহ পার পাবে না। এর আগেও বাসে আগুন লাগিয়ে মানুষ হত্যা করেছে, কেহই পার পায়নি। দেশে বিভিন্ন পরিকল্পিতভাবে একটি শ্রেণী মানুষ হত্যা করছে। এ হত্যারোধে আমরা বিশেষ অভিযান চালু করেছি। আপনারা প্রশাসনকে সহযোগিতা করুন। নিজেরা ঐক্যবদ্ধ থাকুন ও খুনি-সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলুন।
স্থানীয় সংসদ সদস্যের সাথে এসময় উপস্থিত ছিলেন বড়াইগ্রামের ইউএনও মো. রুহুল আমিন, ওসি (তদন্ত) মো. এমরান হোসেন, বনপাড়া পৌর মেয়র কেএম জাকির হোসেন, বনপাড়া খ্রিষ্টান পল্লীর পাল-পুরোহিত ফাদার বিকাশ হিউবার্ট রিবেরু, সহ-সভাপতি বেনেডিক্ট গোমেজ ও স্থানীয় খ্রীষ্টান সম্প্রদায়ের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
নিউজবাংলা/একে
Comments
comments