নিউজবাংলা: ১৩ জুলাই, বুধবার:
নূরুজ্জামান রিকো, সাতক্ষীরা প্রতিনিধি :
ভারতীয গরু আমদানি বন্ধ হওয়ায় সাতক্ষীরা জেলায় দেশী জাতের গরু খামার বেড়েছে। এসব খামারে গরু পালন করে লাভবান হচ্ছে খামারীরা। একই ভাবে দেশী জাতের গরু উৎপাদনের পাশাপাশি মোটাতাজা করা হচ্ছে ওই সব খামারগুলোতে।
অন্যদিকে পারিবারিক ভাবেও দেশী জাতের গরু পালন করা হচ্ছে সাতক্ষীরার বিভিন্ন এলাকাতে। শহরের কিছু কিছু পরিবার ছাড়াও জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের অধিকাংশ পরিবারে দেশী জাতের গরু পালন করা হচ্ছে। এতে করে স্থানীয় ভাবে আমিষের চাহিদা মেটানো ছাড়াও দেশের বিভিন্ন এলাকাতে সরবরাহ করা হচ্ছে সাতক্ষীরার দেশী জাতের গরু।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার তুজুলপুর গ্রামে আনোয়ার এগ্রো-ফার্মে দেশী প্রজাতির বিভিন্ন গরু মোটাতাজ করা হয়ে থাকে। এ প্রতিষ্টানের মালিক মো. আনোয়ার হোসেন জানান, তার খামারে এখন দেশী জাতের ৫০ গরু পালন করা হচ্ছে। তিনি বলেন, জেলার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে দেড় থেকে দুই বছর বয়সের দেশী জাতের এড়ে গরু সংগ্রহ করে তার খামারে পরিচর্জার মাধ্যেমে মোটাতাজা করেন। তিনি আরো বলেন, তার খামারে ৪ থেকে ৫জন শ্রমিক কাজ করে সার্বক্ষনিক ভাবে। এসব শ্রমিকের বেতনসহ অন্যান্য খরচ তুলেও বছরে ৫ থেকে ৬ লাখ টাকা লাভ হয় তার খামার থেকে।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার রইচপুর এলাকাতে রংধু এগ্রো-ফার্ম নামে একটি খামারে দেশী জাতের লাল এড়ে গরু পালন করা হচ্ছে। মোটাতাজাকরনের পাশাপাশি এই খামারে উৎপাদন করা হচ্ছে দেশী জাতের গরু। প্রায় এক দশক ধরে এ খামারে গরু মোটাতাজা করা ছাড়াও উৎপাদনও করা হয়ে থাকে। কিন্ত গত দেড় থেকে দুই বছর ভারতীয় গরু আমদানি বন্ধ হয়ে যাওয়ার এ খামারে বেড়েছে দেশী জাতের গরু পালন।
প্রতিষ্টানির ব্যবস্থাপক জানান, তার খামারে দেশী প্রজাতির ৬০ থেকে ৭০ টি এড়ে গরু রয়েছে। এক থেকে দেড় বছর বয়সের দেশী জাতের এড়ে গরু কিনে তার খামারে পরিচর্জার মাধ্যমে মোটাতাজা করা হয়।
শহরের পলাশপোল মহল্লার বাসিন্দা গৃহবধৃ নার্গিস জানান, তার বসতবাড়িতে দেশী জাতের ৩ টি করে এড়ে গরু পালন করে প্রতি কোরবানী ঈদে বিক্রি করেন। তিনি বলেন,সংসার দেখাশুনার পাশাপাশি এই গরু পালন করে বছরে ৮০ থেকে ৯০ হাজার টাকা বাড়তি উপার্জন করেন। তবে দেশী গরুর যে চাহিদা রয়েছে তা আগামীতে খামার করার চিন্তা ভাবনা রয়েছে তার। তাছাড়া সরকারী অনুদান বা ব্যাংক ঋন সহায়তা পেলে তিনি এ জাতীয় গরু পালন খামার আরো বড় পরিসরে করারও চিন্তা করছেন তিনি।
সাতক্ষীরা জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাক্তার শশাংক কুমার জানান, জেলা সদরসহ বিভিন্ন উপজেলা পর্যায়ে বানিজ্যিক ভিত্তিতে প্রায় শতাধিক খামার গড়ে উঠেছে। এসব খামারে দেশী প্রজাতির গরু মোটাতাজা করার পাশাপাশি উৎপাদন করা হচ্ছে। শুধু তাই নয় সাতক্ষীরার সাতটি উপজেলাতেই বিভিন্ন পরিবারে দুটো থেকে তিনটি করে গরু পালন করা হচ্ছে। তাছাড়া পরিবারে গবাদী পশু পালন করে সহজেই আর্থিক ভাবে লাভবান হওয়া যায়। সংসারের কাজের ফাকে গরু পরিচর্জাটা খুব কষ্টের না। এখান বছরে এক থেকে দেড় লাখ টাকা উপার্জন করা যায় খুব সাভাবিক ভাবে।
নিউজবাংলা/ একে
Comments
comments